রাস্তার ভাতের হোটেল থেকে সিনেমার নায়িকা নন্দিনী গাঙ্গুলি।

 

রাস্তার ভাতের হোটেল থেকে সিনেমার নায়িকা নন্দিনী গাঙ্গুলি।



তাহলে রাস্তার ভাতের হোটেল থেকে সিনেমার নায়িকা হতে যাচ্ছেন কলকাতার ভাইরাল সেই স্মার্ট দিদি।

অবাক লাগলেও এটা কি কিন্ত সত্যিই, মমতা গাঙ্গুলি থেকে নন্দিনী গাঙ্গুলি বলুন কিংবা ফ্যাশন ডিজাইন থেকে কলকাতা অফিস পাড়ার রোডের রাধুনি স্মার্ট দিদি বলুন। এই পুরো জার্নিটা কিন্তু নন্দিনীর জন্য মোটেও সহজ সরল রেখায় ছিলো না। সেই যাই হোক কিন্তু বাস্তবতা যে নাটকের চেয়ে বেশি নাটকীয় তার জলজ্যান্ত প্রমান কিন্তু নন্দিনীর জিবনটাই। তা না হলে কিভাবে ভাতের হোটেল থেকে সিনেমার নায়িকা হবার সুযোগ পেলো এই স্মার্ট দিদি। এবারে চলে যেতে হবে একটু পিছনের দিকে- যারা নিয়মিত স্যোসাল মিডিয়া তে একটিভ থাকেন, তারা কোন না, কোন সময়ে নিজেদের একাউন্ট এর টাইমলাইনে, স্কল করতে করতে কোন না,কোন ভিডিও দেখে থাকবেন, এই স্মার্ট দিদির। এবং সেখানে হয়তো দেখা যাচ্ছে, কলকাতার অফিস পাড়ায় ফুটপাতে একটা প্রাইস হোটেলে, বাবার সাথে সমান তালে রান্না বান্না থেকে শুরু করে খাবার পরিবেশ করছে হাস্যমুখি লাস্যময়ী এ তরুণী। প্রশ্ন হলো সে অফিস পাড়ায় ফুটপাতে তো আরো অনেক প্রাইস হোটেল আছে? নন্দিনীর এত্তো ফেমাস হলো কি করে। আসলে এই জনপ্রিয়তার শুরু কিন্তু একজন অনলাইন ভ্লগারের হাত ধরে, নভেম্বর ২০২২ সালে দিকে তার ভাতের হোটেল নিয়ে প্রথম ভ্লগ হয়, এক ইউটিবার তার প্রাইস হোটেলে ভাত খেতে এসে সাথে নন্দিনীর ভিডিও করে নিয়ে যায়। আর বেস ভাইরাল হয়ে নন্দিনীর কপাল যায় খুলে। অবশ্যই ভাইরাল হওয়ার জন্য তার কাছে মেটেরিয়ালস ছিলো, এমনিতেই সুন্দরী, তার উপর এমবিএ করা চাকরিজীবি মেয়ে ছিলো। এমন একটা মেয়ে চাকরি বাকরি ছেড়ে ফুটপাতে ভাতের হোটেলে কেন নামলো? এ বিষয় গুলো সবাইকে ক্লিক করে। ২০১৯ কোভিডের সময় মায়ের অসুস্থতার কথা শুনে গুজরাট থেকে চলে আসেন কলকাতায়। তখন আবার তার বাবার রাবারের ব্যবসাটাও একদম ডুবে যায়। সেই থেকে বাবার সাথে শুরু করেন এই খাবারের হোটেল। বাবা সকালে বাজার করতো, মা কাটাকাটি করতো আর নন্দিনী সেগুলো রান্না করে নিয়ে যেতো হোটেলে। ভাইরাল হওয়ার পর দিনের পর দিন জনপ্রিয়তার সিমারেখা বড় হতে থাকে নন্দিনীর জন্য , দিদি নাম্বার ওয়ানেরও ডাক পেয়ে যায় সে। আবার মাঝে মধ্যে বিভিন্ন রেস্টুরেন্টের ওপেনিং ও স্পেশাল গেষ্ট হিসাবে ডাকা হয় তাকে।

‌২০২২ থেকে ২০২৩ এই লম্বা সময় ধরে তার সেই প্রাইস হোটেল নিয়ে তিনি জড়িয়ে যান নানা ধরনের বিতর্কে। একবার ভেবে দেখুন তো আপনার প্রত্যেক টা কথা কাজকর্ম কেউ একজন দুর থেকে কিংবা কাছ থেকে ক্যামেরা বন্ধি করছে! কোন কোন ক্ষেত্রে সেটা ঘটছে আপনার অজান্তে, কেমন লাগবে আপনার? এমনটাই কিন্ত হয়েছে নন্দিনীর সাথে, তাও দিনের পর দিন। বেশিরভাগ সময় সব মাথা পেতে নিয়েছেন হাসিমুখে। মানুষ হয়ে যেহেতু জন্মেছে নন্দিনী! পান থেকে চুন তার খসবেই। এবং নন্দিনীর সাথে সেটা ঘটেছে। সে কোন ভুল করলে কিংবা রাগের বশে কাস্টমারদের সাথে খারাপ ব্যবহার করলে মুহূর্তে সেটা ভাইরাল হয়ে যেত। বেস এরপর তাকে ঘিরে তৈরি হয় সমালোচনা, রোস্টিং ভিডিও, এধরনের আলোচনা সমালোচনায় রাতারাতি নন্দিনী দিদি হিরো থেকে হয়ে গেলেন ভিলেন। নন্দিনী দিদি সে নিজেও কিন্তু বুদ্ধিমতি, বিতর্ক কে নিজের কাজে লাগানোর রাস্তা খুব দ্রুতই চিনেছেন তিনি- সেজন্যই ২০২৩ সালে এসে খবরের শিরোনাম - রাস্তার ভাতের হোটেল থেকে সিনেমার নায়িকা নন্দিনী গাঙ্গুলি।

Post a Comment

0 Comments