গ্রেনেড বোমা কি, কেন, কিভাবে কাজ করে।

 গ্রেনেড বোমা তৈরি ও কত প্রকার। এবং কি কি? গ্রেনেড যেভাবে কাজ করে।



নয়শো থেকে এক হাজার বছর আগে চাইনিজদের আবিস্কৃত গান পাউডার বদলে দেয় পৃথিবীর সমরাস্ত্রের ধরন। তখনকার দিনে গ্রেনেড বোমায় ব্যবহার হতো শুধুমাত্র গান পাউডার। তবে সেগুলো খুব একটা উন্নতমানের ও নির্ভরযোগ্য ছিলোনা।  সকল কিছুর প্রযুক্তির সাথে সাথে গ্রেনেডেরও উন্নয়ন করা হয়। আস্তে আস্তে এক সময় এসে এটি পরিপূর্নতা পায়। বর্তমানে এটি যুদ্ধক্ষেত্রে অতি প্রয়োজনীয় ও আধুনিক  একটি অস্ত্র।

কার্যক্ষমতা  উপর ভিত্তি করে গ্রেনেড প্রধানত দুই ধরনের হয়।

Time-Delay Grenade

এ জাতের  গ্রেনেডকে হাত গ্রেনেডও বলা হয়ে থাকে। ১৯ শতকের ভয়াবহ যুদ্ধ গুলোতে এ জাতীয় গ্রেনেড ব্যপক হারে ব্যবহার হয়েছে। টাইম ডিলেয় গ্রেনেড গুলো সাধারনত সেফটি বা নিরাপত্তা  পিন খুলে হাত দিয়ে দুরে ছুঁড়ে মারা হয় এবং  নির্দিস্ট সময় পর তা বিস্ফোরিত হয়। এই সময়টি মুলত  ৩-৪ সেকেন্ড হয়ে থাকে। তবে কোন কারনে গ্রেনেডের রাসায়নিক পদার্থের গুনগতমানের পরিবর্তন ঘটলে এই সময় কম-বেশি ২-৮ সেকেন্ড ও হয়ে থাকে।



time delay যেভাবে কাজ করেঃ  গ্রেনেডগুলো মুলত খাঁজকাটা লোহার  ধারক বা পিন দিয়ে তৈরি হয়ে থাকে। এর ভেতরে একটি ফিউজ মেকানিজম থাকে এবং বাকি অংশে থাকে বিস্ফোরক রাসায়নিক  পদার্থ। ফিউজ মেকানিজম সক্রিয় করার জন্য থাকে একটি Striker যেটি Striker Lever দিয়ে লক করা থাকে। আর লিভারটি ধরে রাখার জন্য এতে লাগানো থাকে একটি সেফটি  পিন। পিনটি খুলে দিলে Striker কে ধরে থাকা লিভারটি চাপমুক্ত হয় এবং Striker ছুটে গিয়ে আঘাত করে পার্কাশন ক্যাপে। এরপর এটি কেমিক্যাল মেকানিজমকে চালু করে দেয় যা কয়েক সেকেন্ড পর ডেটোনেটরকে চালু করে। ডেটোনেটর গ্রেনেড এর ভেতরে থাকা বিস্ফোরক পদার্থ গুলো  ডেটোনেট করে এবং বোমাটি বিস্ফোরিত হয়।

Impact Grenade

এ ধরনের গ্রেনেড এর কার্যকম অনেকটাই উড়োজাহাজ থেকে  মারা বোমার মত। মানে এ গ্রেনেড টার্গেটকে স্পর্শ করার পর পরই বিস্ফোরিত হয়। Impact Grenade হাত দিয়ে নিক্ষেপ করা হয় না। এটি মুলত গ্রেনেড লাঞ্চার থেকে নিক্ষেপ করা হয়। এছাড়াও এক ধরনের মেশিনগান রয়েছে যেটিতে সাধারন বুলেট এর পরিবর্তে ব্যবহার হয় ইম্প্যাক্ট গ্রেনেড !

যেভাবে কাজ করেঃ Impact Grenade এর প্রথমভাগে Impact Trigger নামে একটি অংশ থাকে এবং এটি স্প্রীং দিয়ে মূল কাঠামোর সাথে সংযুক্ত করা থাকে। গ্রেনেড যখন নিক্ষেপ করা হয় তখন Percussion Cap এবং ডিটোনেটর  কে ধরে থাকা স্প্রীংটি সামনের দিকে এগিয়ে যায়। গ্রেনেডের সামনের অংশ মানে ইমপ্যাক্ট ট্রিগার যখন টার্গেটকে স্পর্শ করে তখন এর সাথে লাগানো Firing Pin টি Percussion Cap কে আঘাত করে এবং ডেটোনেটরটি চালু হয়ে মূল বিস্ফোরককে ডিটোনেট করে দেয়। তারপরই গ্রেনেডটি বিস্ফোরিত হয়। এই গ্রেনেড টাইম ডিলেয় গ্রনেড এর মত সময় নেয় না, বরং টার্গেটকে আঘাত করার সাথে সাথেই বিস্ফোরিত হয়।

মূলত এই দুই ধরনের গ্রেনেডই রয়েছে এবং এর কার্যক্ষমতার  উপর ভিত্তি করে আরও বিভিন্ন ধরনের গ্রেনেড তৈরি করা হয়।



এই আর্টিকেলে   মূলত গ্রনেড কিভাবে কাজ করে এ সম্পর্কে ধারনা দিতে চেস্টা করেছি আমার সীমিত জ্ঞান থেকে। কারন সবারই জানা দরকার গ্রেনেড তৈরি সম্পর্কে, জেনে রাখা ভালো। হয়তো আবারও কোন হায়নারা যদি আমাদের দেশে আক্রমণ করে বসে।যদি কখনো প্রয়োজন হয়! জিবন বেঁচে রাখা ফরজ। দেশ স্বাধীনের জন্য হয়তো কাজে লাগতে পারে এই আর্টিকেলটি। তবে মারনাস্ত্র তৈরি ও এ সম্পর্কিত গবেষনাকে আমি বরাবরই ঘৃনা করি। কারন এগুলো একটি সভ্যতাকে ধংস করে দেয়ার হাতিয়ার ছাড়া আর কিছুই নয়।
এগুলো গোটা সভ্যতাকে মাটির সাথে মিশিয়ে দেয়।
আপনাদের এটাও জেনে রাখা উচিত!  পৃথিবীতে যত গুলো পারমাণবিক বোমা আছে তা দিয়ে গোটা পৃথিবীকে ১০ হাজার বার ধ্বংস করা যাবে।
তাই মারণাস্ত্র গবেষণাকে আমি প্রতিনিয়ত ঘৃণা করি।

তবে এই আর্টিকেল টা ভালো লাগলে জানার জন্য আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করবেন।

Post a Comment

0 Comments